স্টাফ রিপোর্টার: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন কুড়িগ্রামের মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাভা অপারেশন পরবর্তী অবস্থায় ভাল আছেন। অপারেশন পরবর্তী সুস্থতার যতগুলো নির্দেশক আছে তার সবগুলোই ভাল আছেন।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ তাদের পোস্ট অপারেটিভ অবস্থায় দেখতে গিয়ে এমন কথা বলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠালবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা ও তার স্ত্রী নাসরিনের গর্ভে মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো কন্যা সন্তান নুহা ও নাভার চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছেন। অপারেশন পরবর্তী অবস্থায় এই দুই শিশুকে খুব সতর্কভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দেশ বাসীর দোওয়ায় তারা এখন ভাল আছেন। সামনের দিনগুলোতে তারা আরও ভাল হয়ে ওঠবে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে প্রথমবারের মত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো জমজ শিশু নুহা ও নাভার পনের ঘণ্টার সফল পৃথকীকরণ অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্ব ১০০জন চিকিৎসকের সার্জিক্যাল টিম সকাল ওদিন ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন অপারেশনের মাধ্যমে শিশু দুটিকে আলাদা করা হয়। ভর্তির পর কয়েকটি ধাপে পর পর অস্ত্রোপচারের পর এ চূড়ান্ত পৃথকীকরণ অপারেশন করা হয়।
বাংলাদেশে এই প্রথম Pyopagus বা মেরুদণ্ড জোড়া শিশুর অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই সফল অস্ত্রোপচারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আইয়ুব আলী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং অনুষদের ডিন ও অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম জাহিদ হোসেন, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবাশীষ বনিক, ভাস্কুলার সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ খান, ইউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রুহুল আমীন সহ ১০০ জন চিকিৎসক এ অস্ত্রোপচারে অংশগ্রহণ করেন।
কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা ও তার স্ত্রী নাসরিনের গর্ভে মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো কন্যা সন্তান নুহা ও নাবা গত ২০২২ সালের ২১ মার্চ কুড়িগ্রামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে জন্ম নেয়। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় (Conjoint Twin) বলে। জন্মের অল্প কয়েকদিন পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজারী অনুষদের ডিন ও নিউরো স্পাইন সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে নুহা ও নাভাকে ভর্তি করা হয়। শিশু দুইটির বয়স এখন ২৩ মাস।
এমটি/ এএটি