স্টাফ রিপোর্টার: ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দেশে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত ছোটকাগজ নিয়ে প্রদর্শনী আয়োজন ও গুরুত্বপূর্ণ ছোটকাগজকে সম্মাননা প্রদান করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিকালে ছোটকাগজ চর্চায় তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ৬ জন লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদককে সম্মাননা প্রদান করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। তারা হলেন- ছোট কাগজ ‘চর্যাপদ’ এর সম্পাদক আযাদ নোমান, “লোক” এর সম্পাদক অনিকেত শামীম, “ঘুংঘুর” এর সম্পাদক হুমায়ুন কবির, “জলধি” এর সম্পাদক নাহিদা আশরাফি, “বুনন” এর সম্পাদক খালেদ উদ-দীন, “হাওরকন্ঠ” এর সম্পাদক আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী।
এছাড়া, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ছোট কাগজ সম্পাদনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয় ৩ জনকে। বিশেষ সম্মাননাপ্রাপ্ত গুণীজন হলেন- “লোকায়ত” এর সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, বিশিষ্ট লেখক ও প্রাবন্ধিক, “গণসাহিত্য” এর সম্পাদক মফিদুল হক, বিশিষ্ট লেখক এবং ট্রাস্টি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং “ত্রৈমাসিক পত্রিকা” এর সম্পাদক প্রয়াত মীজানুর রহমান এর পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তাঁর সহধর্মীনী নূরজাহান বেগম।
বুধবার (১০ জুলাই) বিকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই ‘লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনী ও সম্মাননা ২০২৪’ এর। অনুষ্ঠানের শুরুতে লিটল ম্যাগাজিন প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
সম্মাননা প্রদান ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক, অনুবাদক এবং সম্পাদক ‘শিল্পকলা’ অধ্যাপক আবদুস সেলিম। আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ এবং সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
আলোচনায় বিভিন্ন সময় ছোট কাগজগুলোর প্রকাশনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের সঙ্কটগুলো তৈরী হয় তা তুলে ধরেন আলোচকরা। তারা বলেন, “শিল্প-সাহিত্য চর্চার বিকাশে লিটল ম্যাগাজিন তথা ছোটকাগজ চর্চা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এলেও বিভিন্ন বইমেলা আয়োজনে ছোট কাগজকে তেমন গুরুত্বের চোখে দেখেন না আয়োজকরা”।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, “আমরা শিল্পকলা একাডেমি থেকে প্রত্যেক জেলায় ১০ হাজার করে টাকা পাঠিয়েছি, যাতে ওইসব জেলা বা উপজেলায় যারা লেখালেখি করেন তাদের বই কিনে লাইব্রেরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। সুতরাং যারা জেলা উপজেলা পর্যায়েও লেখালেখির মধ্যে আছেন তাদের বই ক্রয় করা আমরা শুরু করেছি। এছাড়া জেলা থেকে লিটল ম্যাগাজিন বের করার ক্ষেত্রেও আমরা অর্থায়ন করে থাকি।
বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে তিনি আরো বলেন, “সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই। সোনার মানুষ বলতে তিনি যা বুঝিয়েছেন আসলে দেশকে যারা ভালোবাসে, নিষ্ঠাবান, সৃজনশীল, চৌকস সবকিছু মিলিয়ে তিনি বলেছেন সোনার মানুষ তারাই হবে যারা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে ভুমিকা রাখে, আর সেই চেষ্টাটাই আমরা করে যাচ্ছি’। পরে পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান তিনি।
সম্মাননাপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুল্যমানের চেক, সনদপত্র, উত্তরীয় ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
পুরস্কার গ্রহণ শেষে পরিবেশিত হয় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নৃত্য নির্মিতি বিপুল তরঙ্গ রে।
জাতীয় চিত্রশালার ৫নং গ্যালারিতে ১০ থেকে ১৬ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী। অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এমটি/ এএটি