বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশ ওপেন এয়ার কনসার্টের শ্রেষ্ঠ ভেন্যু রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়াম। দেশ-বিদেশের শিল্পীদের দিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় কনসার্টগুলো একসময় নিয়মিত হতো এই ভেন্যুতে। সেখানেও কখনও এমন চিত্র দেখা যায়নি, যেটা দেখা গেলো ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের নর্থ কোর্টে।

এদিন বিকাল ৫টায় শুরু হয়েছিলো ‘লিজেন্ডস অব দ্য ডিকেড’ কনসার্ট। যেখানে অংশ নিয়েছে পাকিস্তানের ‘জাল’ এবং ঢাকার তিন ব্যান্ড ‘অর্থহীন’, ‘ভাইকিংস’ ও ‘কনক্লুশন’। আয়োজনটির মূল চমক ছিলো ১৪ বছর পর পাকিস্তানের ‘জাল’ ব্যান্ডের ঢাকা সফর। যদিও সব চমক ভেস্তে গেছে আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা আর দর্শকদের অসহিষ্ণুতায়। কনসার্ট শুরু হয়েও মুহূর্তে যেন সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেলো। দর্শক আয়োজকদের সঙ্গে হাতাহাতি, ভাঙচুর; অবশেষে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। তাদের উপস্থিতিতে কোনোমতে শেষ হয়েছে আলোচিত এই কনসার্ট।

সন্ধ্যার আগে আগে, ‘কনক্লুশন’ ব্যান্ডের পরিবেশনা শেষে মঞ্চে তখন পারফর্ম করছিলেন ‘ভাইকিংস’ সদস্যরা, সঙ্গে কানিজ সূবর্ণা। বাইরে চলছিলো হট্টগোল। হুড়মুড় করে নিরাপত্তা বেড়ি ভেঙে স্রোতের মতো ঢুকে পড়েছে শত শত দর্শক। এরপর দর্শক সারির একপাশে হঠাৎ ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ভেন্যুজুড়ে। গান বন্ধ করে মঞ্চ ছাড়তে বাধ্য হন ভাইকিংস সদস্যরা।

বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে মঞ্চে ওঠেন যমুনা গ্রুপের পরিচালক আলমগীর আলম। তিনি বলেন, ‌‘২৭ সেপ্টেম্বর এই কনসার্ট ঢাকার পূর্বাচলে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সরকার পতনের পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরালো করতে পারবে না বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খোলা মাঠে কনসার্ট হতে দেয়নি। এরপর শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে যমুনার নর্থ কোর্টে কনসার্ট করার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু আপনাদের বিশৃঙ্খলার কারণে এইখানের দোকান মালিকরা আতঙ্কে আছে। বারবার কনসার্ট বন্ধ করার জন্য বলা হচ্ছে। আমরা আমাদের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী ডেকেছি। কেউ বিশৃঙ্খলা বা ঝামেলা করলে সাথে সাথে গ্রেফতার করা হবে।’

এরপর প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল ‘লেজেন্ডস অব দ্য ডিকেড’ কনসার্ট। কনসার্ট স্থলে হাজির হন সেনাবাহিনীর সদস্যরা, মঞ্চের সামনে থেকে দর্শকদের মুখোমুখি অবস্থান নেন তারা। এভাবে তাদের সশস্ত্র উপস্থিতে আবারও শুরু হয় কনসার্ট। মঞ্চে ওঠে ব্যান্ড অর্থহীন। যেখানে শেষবারের মতো অর্থহীনের সঙ্গে পারফর্ম করেন ব্যান্ডটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে থাকা গিটারিস্ট মহান ফাহিম। তিনি অসুস্থতার কারণে দল থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন এই কনসার্টের মাধ্যমে।

সবশেষে মঞ্চে ওঠে পুরো আয়োজনের মূল চমক ‘জাল’। দলটি পরিবেশন করে ‘ও লামহে’, ‘লাইয়া লাইয়া’, ‘সাজনি’, ‘পানছি’, ‘আদাত’ প্রভৃতি। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ অনেকটা হুট করেই মঞ্চ ছাড়ে জাল সদস্যরা।

আগত দর্শকরা মনে করেন, বিলম্বে হলেও সেনাবাহিনীর সদস্যরা না আসলে এই কনসার্ট আর হতোই না। বরং আরও ভয়ংকর দাঙ্গার সৃষ্টি হতে পারতো।

এমটি/ এএটি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email