স্টাফ রিপোর্টার: সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিল্প-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতায় সবসময় তৎপর। তিনি নিয়মিত শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মীদের বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন এবং তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। এর আরেকটি বড় প্রমাণ হলো করোনা মহামারিকালীন সময়ে তিনি নিজস্ব তহবিল হতে ৭০ জন রিকশাচিত্র শিল্পীদের অনুদান প্রদান করেন যা সত্যিই অভূতপূর্ব। তাছাড়া ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র সহ বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যসমূহকে ইউনেস্কো’র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে তিনি নিয়মিত নির্দেশনা প্রদান করে আসছেন।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে (ইউনেস্কো) কর্তৃক অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় ‘ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র’ অন্তর্ভুক্তি ও স্বীকৃতি প্রদান উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমি আয়োজিত রিকশাচিত্র শিল্পীদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথি বলেন, আট বছরের নিরলস শ্রম ও প্রচেষ্টার ফলে ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র অবশেষে বাংলাদেশের ৫ম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে ইউনেস্কো’র অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

গত ৬ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায় অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিষয়ক ২০০৩ কনভেনশনের ১৮তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সভায় এ বৈশ্বিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। ইউনেস্কো’র গাইডলাইন অনুসরণে তৈরি করা রিকশাচিত্রের ফাইলটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপস্থাপনা হিসাবেও ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে। সেজন্য বাংলা একাডেমি ও বাংলাদেশ দূতাবাস, ফ্রান্সকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, রিকশা চিত্রশিল্পীরা গত ৮০ বছর ধরে বংশানুক্রমিকভাবে এ শিল্পটিকে টিকিয়ে রেখেছে। এ স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে রিকশা চিত্রশিল্পকে টেকসইভাবে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে মর্মে আমি মনে করি।

বাংলা একাডেমির সভাপতি বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির ফোকলোর, জাদুঘর ও মহাফেজখানা বিভাগের পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান এবং বাংলাদেশ দূতাবাস, প্যারিস, ফ্রান্সের প্রথম সচিব ওয়ালিদ বিন কাশেম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলা একাডেমির সচিব ড. মোঃ হাসান কবীর। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ বলেন, রিকশাচিত্রে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে ফুটিয়ে তুলতে হবে।

একইসঙ্গে তুলে ধরতে হবে সরকারের মেগা প্রকল্প ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সার্বিক চিত্র। তিনি বলেন, এ শিল্পকে টেকসই করতে হলে রিকশা পেশাজীবী ও রিকশা চিত্রশিল্পীদের সংগঠিত করতে হবে। এজন্য আমরা ইতোমধ্যে অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সংস্কৃতি সচিব বলেন, ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ থেকে শুরু হতে যাওয়া ৪৭তম আন্তর্জাতিক কোলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নকে সাজানো হচ্ছে রিকশাচিত্র দিয়ে। বাংলা একাডেমির মাধ্যমে রিকশাচিত্র শিল্পীদের নিয়ে আর্টক্যাম্প আয়োজন করা হচ্ছে। তাছাড়া ইউনেস্কো থেকে এ শিল্পের সংরক্ষণে তহবিল সংগ্রহ করা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email