পদ্মা নদী বিধৌত শরীয়তপুরের অন্যতম জনবহুল থানা সখিপুর।সম্ভাবনাময় সখিপুরকে অধিক অগ্রগামী করার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন ভেদরগঞ্জ থানা হতে ৯ টি ইউনিয়ন নিয়ে পৃথক সখিপুর থানা আত্মপ্রকাশ হয়। ১৯৯৯ সাল থেকেই চরভাগা, সখিপুর, উত্তর তারাবুনিয়া,দক্ষিণ তারাবুনিয়া,কাঁচিকাটা, চরকুমারিয়া, আরশিনগর, চরসেনসাস ও ডিএমখালী নিয়ে সখিপুর থানার কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।

বর্তমানে সখিপুর থানায় মোট জনসংখ্যা ১,৬২,৬২৭ জন। পুরুষ ৮৫,৪৫৮ জন ও নারী ৭৭,১৬৯ জন। সখিপুর যেমনিই সম্ভাবনার তেমনিই নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। যার উদাহরণ দুর্গম চরাঞ্চল বেষ্টিত কাঁচিকাটা ইউনিয়ন। কাঁচিকাটা সখিপুর থানা হতে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যার মধ্যে রয়েছে প্রমত্তা পদ্মার ১৫ কিলোমিটার নদী পথ। সখিপুর হতে কাঁচিকাটা যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম নৌকা। কেননা চারদিকে জলবেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল হল কাঁচিকাটা। বর্তমান উপজেলা ভেদরগঞ্জে যাওয়ার জন্য দুর্গম চরের বাসিন্দাদের নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষত ১৭,৩৫২ জন জনসংখ্যার জলবেষ্টিত দুর্গম চরের লোকদের স্বাস্থ্যসেবা পেতে নানা প্রকার প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হয়। যার ফলে শিশু, বৃদ্ধ ও চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠীর তীব্র সমস্যার নিপতিত হয়। উপজেলা শহর দূরবর্তী হওয়ায় চরের মানুষ স্বাস্থ্যেসেবা ও জরুরী নানা ধরনের কাজে পাশ্ববর্তী মুন্সিগঞ্জ ও চাঁদপুর শহরে যাতায়াত করেন যা খুবই বিপদজনক!

সখিপুরের অধিকাংশ মানুষ কৃষিনির্ভর এর বাইরেও বৃহৎ একটি অংশ জেলে পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট। কৃষিনির্ভর জনপদটি উপজেলা প্রশাসনের যথার্থ পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। যার প্রধানতম কারণ উপজেলা শহর দূরবর্তী হওয়া।

বৃহৎ জনসংখ্যার পুরাতন থানাটি উপজেলায় রুপান্তরিত করার জন্য বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীম এমপি ২০২২-২০২৩ অর্থ-বছরের বাজেটের বক্তব্যে সখিপুর উপজেলা করার জন্য সংসদ নেতা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নিকট জোড়ালো দাবী উত্থাপন করেন।বর্তমান সরকারের “স্মার্ট বাংলাদেশ ” ভিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যকে ত্বরান্বিত করতে সখিপুর উপজেলা সময়ের দাবী। উপজেলা বাস্তবায়িত হলে দুর্গম চরাঞ্চল সহ অবহেলিত অঞ্চল গুলো তড়িৎ গতিতে অগ্রগামী হবে।

উল্লেখ্য যে, সর্বশেষ উপজেলা মাদারীপুরের ডাসার, কক্সবাজারের ঈদগাঁ, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ২০২১ সালে শেষ গেজেটভুক্ত উপজেলা হিসেবে যাত্রা শুরু করে। তন্মধ্যে ডাসার থানা ২০১৩ সালে ২রা মার্চ ও ঈদগাঁ থানা ২০১৯ সালে ২২ই অক্টোবর থানা হিসেবে যাত্রা শুরু করে। উপরিক্ত দুই থানা হতে সখিপুর যথাক্রমে ২০ ও ১৪ বছরের পুরাতন থানা। সখিপুর থানা উল্লেখিত তিন উপজেলা হতে জনসংখ্যা ও ইউনিয়ন দিক বিবেচনায় অধিক । বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার মূলক অনেক কাজ চোঁখে পড়ার মত।সখিপুরকে পূর্নাঙ্গ উপজেলা হিসেবে বাস্তবায়ন করলে ৯ টি ইউনিয়ন এবং দুর্গম চরাঞ্চলের অবহেলিত অধিবাসীগন নানাবিধ সরকারী সুযোগ সুবিধা দ্রুততার সাথে অগ্রাধিকার পাবে।

সখিপুর উপজেলা বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকারের নীতি-নির্ধারক, স্থানীয় সাংসদ ও সুশীল সমাজের সুদৃষ্টি প্রয়োজন। সখিপুর একটি উপজেলায় উন্নীত হবে, একদিন স্মার্ট উপজেলার স্বীকৃতি পাবে– এটাই এলাকাবাসীর প্রত্যাশা।

জে এম রফিকুল সরকার
শিক্ষার্থী,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
মোবাইল: ০১৭৯৪১৮৩৩৪৫
Sarkarrafiqul42@gmail.com

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email