স্টাফ রিপোর্টার: সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ক্রীড়াবিদরা স্পেশাল অলিম্পিকে রেকর্ড সংখক পদক জয় করে বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। তারা দেশের জন্য সন্মান বয়ে আনে। এই গেমসের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা বাজেট রাখা হবে।

মন্ত্রী বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রু) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্পেশাল অলিম্পিক ওয়ার্ল্ডস গেমস্ বার্লিন -২০২৩ বিজয়ীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সরকার প্রতিবন্ধীদের নিয়েই দেশের উন্নয়নে বিশ্বাসী। আমাদের সামনে স্মার্ট বাংলাদেশের যে লক্ষ্য তা বাস্তবায়নের জন্য স্মার্ট নাগরিক দরকার। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে সকল ধরনের সহযোগিতা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে স্মার্ট নাগরিকে পরিণত করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, ১৫ বছর আগেও অটিজম কথাটার সংগে কেউ পরিচিত ছিলনা। এই অটিজম আক্রান্ত শিশুর পরিবার, অনেকক্ষেত্রে চিকিৎসকরাও পরিচিত ছিলনা। এই শিশুদের অভিশাপ হিসেবে চিন্তা করা হতো এবং বাবা মায়েরা একটি অভিশপ্ত জীবন যাপন করতেন। প্রধানমন্ত্রীর কন্যা অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ এর কাজের কারনে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচেতন হয়েছেন এবং সারা দেশের মানুষ সচেতন হয়েছে। এখন দেশের মানুষ জানে অটিজম কি, তাদের চিকিৎসার জন্য কি কি করতে হবে, কোথায় যেতে হবে। তাদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও বিনোদনের জন্য অনেক স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সরকার কিছু করেছে- সশস্ত্র বাহিনী কিছু করেছে। এরকম আরও স্কুল দেশের বিভিন্ন জায়গায় আছে। কিছু আছে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত, কিছু আছে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নয়। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত নন-এমপিওভুক্ত ও রয়েছে।

প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় নিয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশে যখন একটা কিছু শুরু হয়, অনেকটা হুজুগের মত সবাই করতে থাকে। এখন আবার অটিজম স্কুল নিয়ে সেরকম হয়েছে। একেকজন একটা করে অটিজম স্কুল খুলে ফেলছেন। আমাদের দেখতে হবে, শুধু স্কুল খুলে ফেললাম, সেটা ঠিক নয়, সঠিকভাবে খুলতে পারছি কিনা, সেখানে প্রয়োজন আছে কিনা, নীতিমালা মেনে করছি কিনা।

অটিজমের পুরো স্পেক্ট্রামে কিছু শিশু আছে তাদের স্বাভাবিক স্কুলেই পড়া উচিৎ এবং সেখানেই তারা পড়তে পারবে, সেখানে শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, তারা অন্যান্য শিশুদের সংগে মিশে উপকৃত হবে, অন্য শিশুরাও সহমর্মি হবে। যাদের কোনভাবেই স্বাভাবিক বিদ্যালয়ে পড়ানো সম্ভব নয়, শুধু সেই সকল বাচ্চাদের জন্য আলাদাভাবে স্কুল হতে পারে। বিশেষ স্কুল কাদের জন্য তা বুঝতে হবে। শুধু কিছু একটা করতে হবে, কিছু লোকের কর্মসংস্থান হবে তার জন্য করছি, এরকম হলে হবে না। হাজার হাজার স্কুলকে এমপিও দেয়া সম্ভব না। প্রত্যেকটা স্কুলকে নীতিমালার আলোকে যাচাই-বাছাই করে শুধু মাত্র স্বীকৃতি, তার পরে এমপিওভুক্তির প্রশ্ন আসবে। সরকারে এ বিষয়ে মানের ক্ষেত্রে কোন ধরনের আপস করবেনা। বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের বিদ্যালয়ের মানের বিষয়ে কোন আপস নেই। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম নতুন পাঠ্যক্রমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংগে কাজ করবে।

এর আগে মন্ত্রী বার্লিন স্পেশাল অলিম্পিক ২০২৩ এ পদক বিজয়ীদের সম্মাননা ও সনদ তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) ঢাকা এর চেয়ারম্যান মো: আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে সমাজকল্যাণ সচিব মোঃ খায়রুল আলম সেখ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

এমটি/ এএটি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email