অনলাইন ডেস্ক: ভয় এমন এক অনুভূতি যার পরিচয় শিশু বয়সেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু মাত্রেই ভয় পাবে এটাই খুব স্বাভাবিক। কেউ বাবা মায়ের থেকে দূরে যেতে ভয় পায়,কেউ নতুন মানুষকে দেখে ভয় পায় কেউ বা নতুন খেলনা দেখেও ঘাবড়ে যায় । শিশুর ছোট ছোট ভয় কাটাতে বাবা-মাকেই ভূমিকা রাখতে হবে।
শিশুরা খুবই কল্পনাপ্রবণ হয়। তাই কোনও সামান্য জিনিস নিয়ে ভয় পাওয়া তাদের ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ ঘটনা। সদ্যোজাত শিশু যেমন মায়ের পরিচিত স্পর্শ না পেলেই ভয় পেয়ে কাঁদে, তেমনই বড় হলে স্কুল যাওয়ার সময়ও প্রথম প্রথম সে ভয় পায়। এমনকী অপরিচিত পরিবেশের নিয়েও তার মনে আকাশ কুসুম কল্পনা থাকে। সব মিলিয়ে ‘ভয়’শিশুদের নিত্যসঙ্গী। শুধু বদলে যায় ধরণ।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় বয়স বাড়লেও অনেকের ছোটখাটো জিনিসে ভয় কাটছে না। এ কারণে সময়মতো শিশুর ভয় কাটানো না গেলে তার গভীর প্রভাব পড়তে পারে তাদের বিকাশে। তাই কী ভাবে কাটাবেন সন্তানের অহেতুক ভয়, সেই টিপস জেনে রাখা জরুরি।
ছোট শিশুদের অধিকাংশই অন্ধকার ভয় পায়। কিন্তু,শিশু যদি কোনও কিছু নিয়ে অতিরিক্ত ভয় পায় বা হিস্টিরিয়া গ্রস্তের মতো কাঁদে, তাহলে অবশ্যই তা চিন্তার বিষয়। এমনকী তিন বছরের পর বাবা-মায়ের কাছছাড়া হলেই বাচ্চা যদি কান্নাকাটি শুরু করে দেয়, তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শিশু কেন ভয় পাচ্ছে তা নিয়ে বাবা-মায়েদেরই উচিত সন্তানের সঙ্গে কথা বলা। আদর করে কাছে ডেকে শিশুকে জিজ্ঞেস করুন কেন সে ভয় পাচ্ছে। তার সব কথা শোনার পর যুক্তি দিয়ে তাকে বিষয়টি বুঝিয়ে কাটিয়ে ফেলুন সেই ভয়।
অনেক সময় সামান্য জিনিস নিয়ে শিশু ভয় পাচ্ছে দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে বাবা-মায়েরা বকাবকি শুরু করে দেন। এমন ভুল এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। কারণ বকাঝকার কারণে শিশু আরও বেশি ভয় পেয়ে যাবে। এমনকী হারিয়ে ফেলতে পারে আত্মবিশ্বাস। এতে ভয় কাটার বদলে তা রীতিমতো ট্রমার আকার ধারণ করবে।
অনেকে বাচ্চার ভয়ের কথা শুনে হেসে উড়িয়ে দেন। এমনকী সন্তানের সামান্য জিনিসে ভয় পাওয়া নিয়ে পরিবারের বাকি সদস্যদের সামনে হাসি মস্করাও করেন অনেকে। এতে বিষয়টি হালকা করে দেওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রচেষ্টার প্রভাব হতে পারে ভয়ঙ্কর। শিশু তাহলে নিজেকে গুরুত্বহীন মনে করে হতাশ বোধ করবে।
শিশুর ভয় কাটানোর আগে তাকে আশ্বস্ত করুন। তাকে বোঝান যে, যাই কিছু হয়ে যাক তার বাবা-মা পাশে আছে। অতএব কোনও কিছু খারাপ তার কাছে আসতেই পারবে না। এরপর গল্পের মাধ্যমে তার ভয়ের কারণে জেনে নিয়ে তাকে বোঝান যে এতে বিপদ ঘটার কোনো কারণ নেই। তাহলেই দেখবেন কেমন সহজে নিজের ছোটখাটো ভয়গুলোকে কাটিয়ে একেবারে সাহসী হয়ে উঠবে সন্তান।
এমটি/এএটি