স্টাফ রিপোর্টার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এটিই দু:খজনক যে বিএনপি জনগণের কোনো সহযোগিতা চায় না, বিদেশিদের সহযোগিতা চায়।

মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান সরকারের বিরূদ্ধে বিদেশি বন্ধুদের সাহায্য চেয়েছেন’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আর আওয়ামী লীগ সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে গিয়ে বিএনপি নিজেই ধপাস করে পড়ে এখন হাঁটা শুরু করেছে, হেঁটে হেঁটে লিফলেট বিতরণ করছে। দলটাকে টিকিয়ে রাখা, অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্যই মঈন খান এ সব কথা বলছেন।’

‘শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে এবং আওয়ামী লীগের ভিত জনগণের গভীরে প্রোথিত’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপিই এখন নড়েবড়ে হয়ে গেছে। তাদের নেতাদের ওপর কর্মীদের কোনো আস্থা নেই। মূল নেতাদের ওপর কেন্দ্রীয় নেতাদের আস্থা নেই। তাদের এখন নেতৃত্বের টানাপোড়ন চলছে।’

এ সময় সাংবাদিকরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ‘বরই না খেজুর দিয়ে ইফতার হবে- সেটিও সরকার বলে দেবে’ এমন মন্তব্য করেছেন উল্লেখ করলে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘সরকার এটি বলেনি, এটি ব্যক্তিগত অভিমত। বরং সাধারণ মানুষ যাতে সুলভ মূল্যে পণ্যসামগ্রী পায় সে জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা যেন অহেতুক ইফতার পণ্যসামগ্রীরও মূল্যবৃদ্ধি না করতে পারে সে জন্যও নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন রমজানে যেন অহেতুক কোনো ব্যয় না করা হয়, অহেতুক কোনো ইফতার পার্টিও না করা হয় বরং সেই টাকা যেন সাধারণ মানুষের মাঝে দেওয়া হয়। সে হিসেবে আমি আমার এলাকায় এবং সকল সংসদ সদস্য ও নেতৃবৃন্দ যার যার এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছি।

তিনি বলেন, অপরদিকে বিএনপি রমজানের প্রথম দিনেই ইফতার পার্টি করে সরকারের বিরূদ্ধে বিষোদগার করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখলাম বিএনপি কোথাও কোথাও ইফতার পার্টির নামে চাঁদাবাজিও করছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকদের সুস্থ ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে নাবিক এবং জাহাজ দুটোকেই মুক্ত করা।

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী যারা দেশে অবস্থান করছে তাদের প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের আগের মতোই ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ইউএই’র রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত

এর আগে মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লা আলী আব্দুল্লা খাসিফ আলমুদি (Abdulla Ali Abdulla Khaseif AlHmoudi) সাক্ষাৎ করেন। সে বিষয়ে মন্ত্রী জানান, ‘সম্প্রতি আরব আমিরাতে আমার দ্বিপাক্ষিক সফরে সে দেশের পররাষ্ট্র ও কর্মসংস্থান মন্ত্রীদ্বয়ের সাথে সামগ্রিক সব বিষয়ে আলোচনার ‘ফলো আপ’ সাক্ষাত এটি। ইউএই’র সাথে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক। সেখানে এক মালিক হতে অন্য মালিকের অধীনে ‘আকামা’ বা কর্মানুমতি হস্তান্তর সহজ করার বিষয়ে এবং দুবাই ছাড়া অন্য আমিরাতগুলোতে বাংলাদেশিদের ‘ওয়ার্ক পারমিট’ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

পাশাপাশি দেশে ইউএই’র বিনিয়োগ বাড়াতে ইকোনমিক জোনগুলোতে আরব আমিরাতকে বিনিয়োগের আহবান এবং মাতারবাড়িতে ৩০০ একর জমি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, জানান ড. হাছান।

মন্ত্রী আরও বলেন, গাজায় নির্বিচারে শিশু ও নারী হত্যা চলছেই। গাজা বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কারাগারে পরিণত হয়েছে। এই ঘৃণ্য সহিংসতা বন্ধে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার বিষয়ে একযোগে কাজ করা নিয়ে কথা হয়েছে।

এমটি/ এআর

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email