অনলাইন ডেস্ক: শুধু বাংলাদেশ নয়, উপমহাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী, প্রাচীন এবং সফল রাজনৈতিক দল। গোটা বিশ্বে যে ক’টি রাজনৈতিক দল নিজ নিজ দেশর গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অন্যতম।
বাংলাদেশে গণমানুষের রাজনীতি ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এ রাজনৈতিক দলটির ভূমিকা হিমালয় চূড়াস্পর্শী। তবে, সবকিছু ছাপিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় পরিচয় হল- এটি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া একমাত্র রাজনৈতিক সংগঠন।
দলটির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যথার্থই বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ কেবলমাত্র একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি অনুভূতির নাম।’ ১৯৪৯ সালে জন্ম নেওয়া এই রাজনৈতিক দলটি বাংলাদেশ নামক ভূ-খণ্ডের জন্য যে ভূমিকা পালন করেছে, যতটা ত্যাগ স্বীকার করেছে, যেসব ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে এবং গণমানুষের যে পরিমাণ ভালোবাসা এবং আস্থা অর্জন করেছে তা অতুলনীয়, অভূতপূর্ব। এ অঞ্চলে এতটা প্রভাব বিস্তারকারী রাজনৈতিক দল বিংশ শতাব্দীতে আর জন্মলাভ করেনি।
ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই দলটি অসংখ্য নেতারা জন্ম দিয়েছে। যারা কেবল দেশ নয়, দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও পরিচিতি পেয়েছেন। এই দলেরই প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে উঠেছেন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশের স্থপতি ও বাঙালি জাতির জনক। প্রতিষ্ঠাকালে যিনি এ দলটির হাল ধরেছিলেন তিনিও ছিলেন আফ্রো-এশিয়া, লাতিন-আমেরিকার অবিসংবাদিতন নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। আর এ দলটি প্রতিষ্ঠায় নেপথ্য কারিগর ছিলেন উপমহাদেশের দুই কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেম।
এ ছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, (এ এইচ এম কামরুজ্জামান), তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান, মহিউদ্দীন আহমেদ, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন, আবদুল মালেক উকিল, শেখ আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল জলিল, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সুরঞ্জিত সেন গুপ্তসহ অসংখ্য কিংবদন্তিতুল্য রাজনীতিবিদের নাম। যারা আমৃত্যু আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন।
উপরে উল্লিখিত নমাগুলো ছাড়াও গত ৭৫ বছরের পথচলায় আওয়ামী লীগ হারিয়েছে কিংবদন্তিতুল্য অসংখ্য রাজনীতিবিদ ও নেতা। এদেরে প্রকৃত সংখ্যা বলা মুশকিল। তবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মওলানা ভাসানী থেকে শুরু করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পর্যন্ত যে অসংখ্য-অজস্র নেতা বিগত হয়েছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হল।
শামসুল হক (১৯১৮-১৯৬৫)
শামসুল হকের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল বিভাগ-পূর্ব ভারতবর্ষে এবং তিনি পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। শামসুল হক ছিলেন আওয়ামী লীগের পূর্বসূরী আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি পাকিস্তানের গণপরিষদের সংসদীয় কমিটির সদস্যও ছিলেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। শামসুল হক আওয়ামীলীগের প্রথম এবং তৃতীয় মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ১০ বছর পথে পথে ঘোরার পর ১৯৬৫ সালের কোনো একদিন তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শেখ মুজিবুর রহমান (১৯২০-১৯৭৫)
১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুন হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী এবং মাওলানা ভাসানী পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করলে শেখ মুজিবুর রহমান মুসলিম লীগ ছেড়ে এই নতুন দলে যোগ দেন। তাকে দলের পূর্ব পাকিস্তান অংশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ১৯৫৩ সালের ৯ জুলাই পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন শেষে তাকে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের পহেলা মার্চ তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ভোরে একদল সেনা কর্মকর্তা ট্যাঙ্ক দিয়ে ধানমন্ডিস্থ বাসভবন ঘিরে ফেলে এবং শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার এবং ব্যক্তিগত কর্মচারীদের হত্যা করে। শেখ মুজিবের পরিবারের সদস্য বেগম ফজিলাতুন্নেসা, শেখ কামাল ও তার স্ত্রী সুলতানা কামাল খুকী, শেখ জামাল ও তার স্ত্রী পারভীন জামাল রোজী, শেখ রাসেল, শেখ মুজিবের ভাই শেখ আবু নাসের হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এ ছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি এবং তার স্ত্রী বেগম আরজু মনি, শেখ মুজিবের ভগ্নিপতি ও মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার কন্যা বেবী সেরনিয়াবাত, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতনি সুকান্ত বাবু, বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত ও এক আত্মীয় বেন্টু খানকে হত্যা করা হয়।
এছাড়া শেখ মুজিবের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা জামিল উদ্দিন আহমেদ, এসবি কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হক নিহত হন। কেবলমাত্র বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বঙ্গবন্ধুর শরীরে মোট ১৮টি বুলেটের দাগ দেখতে পাওয়া যায়। তন্মধ্যে, একটি বুলেটে তার ডান হাতের তর্জনী বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম (১৯২৫-১৯৭৫)
সৈয়দ নজরুল ইসলাম ১৯২৫ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার যশোদল দামপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৭ সালে এমএ এবং ১৯৫৩ সালে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ১৯৫৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৬-৬৯ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রেফতারের পর সৈয়দ নজরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত মুজিবনগর সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি এবং শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদে শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় সৈয়দ নজরুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
তাজউদ্দীন আহমদ (১৯২৫-১৯৭৫)
তাজউদ্দীন আহমদ ১৯২৫ সালে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত পূর্ব বাংলা ছাত্রলীগের (বর্তমান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৫২ রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তিনি ভাষা আন্দোলনকালে গ্রেফতার হন এবং কারা নির্যাতন ভোগ করেন। ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে কারাবন্দি অবস্থায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তিনি আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন এবং মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তাজউদ্দিন আহমদকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
মোহাম্মদ মনসুর আলী (১৯১৯-১৯৭৫)
মোহাম্মদ মনসুর আলী ১৯১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ জেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের কুড়িপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৫ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ এবং ল’ পাস করেন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত মুজিবনগর সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় মোহাম্মদ মনসুর আলীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান (১৯২৬-১৯৭৫)
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ১৯২৬ সালের ২৬ জুন নাটোর মহকুমার বাগাতীপাড়া থানার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স পাস করেন এবং রাজশাহী আইন কলেজ হতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল গঠিত মুজিবনগর সরকারের স্বরাষ্ট্র, কৃষি এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
মওলনা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী (১৮৮০-১৯৭৬)
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলীম লীগ প্রতিষ্ঠা হলে মওলনা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত কাগমারী সম্মেলনে তিনি পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিলের দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী সেই দাবি প্রত্যাখান করলে ১৮ মার্চ আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই দেশবরেণ্য নেতা মৃত্যুবরণ করেন। তাকে টাঙ্গাইল জেলার সদর উপজেলার উত্তর-পশ্চিমে সন্তোষ নামক স্থানে পীর শাহজামান দীঘির পাশে সমাধিস্থ করা হয়। সারাদেশ থেকে আগত হাজার হাজার মানুষ তার জানাজায় অংশ নেয়।
মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ (১৯০০-১৯৮৬)
মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ ছিলেন আওয়ামী মুসলিম লীগের দ্বিতীয় সভাপতি ও পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য। তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আশির দশকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন অবধি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ ১৯০০ সালের ২৭ নভেম্বর পাবনা জেলার সিরাজগঞ্জ মহকুমার উল্লাপাড়া থানাধীন তারুটিয়া গ্রামে এক পীর বংশে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৬ সালের ২০ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।
জিল্লুর রহমান (১৯২৯-২০১৩)
জিল্লুর রহমান ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বংলাদেশের সব কটি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৬ সালে কিশোরগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭২ সালে প্রথম বারের মতো কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীকালে ১৯৭৪, ১৯৯২ ও ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালের ১০ মার্চ কিডনি ও মূত্রপ্রদাহে আক্রান্তজনিত কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ২০ মার্চ সেখানে মৃত্যুবরণ করেন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (১৯৫২-২০১৯)
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জ-৩ আসন থেকে সপ্তম ও অষ্টম, কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৫ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। এর আগে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ৬ জানুয়ারি ঢাকার বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
এমটি/ এএটি