স্টাফ রিপোর্টার: প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ চার নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্ট) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নির্ধারণ করা থাকলেও মাত্র আড়াই বছরেই বিদায় নিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৈঠকের পর সিইসি অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের সাথে সম্মিলিতভাবে নির্বাচন কমিশন সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন, যিনি রাষ্ট্রপতির কাছে তা পৌঁছে দেবেন।
এ সময় কয়েকজনকে ইসি ভবনের সামনে জড়ো হয়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সংবাদ সম্মেলনের সময় সিএসইসহ দুইজন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। অন্য দুজন কমিশনার পদত্যাগ করলেও তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না।
তাদের অনুপস্থিতির বিষয়টি সাংবাদিকরা জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। পরে একজন ইসি ব্যক্তিগত সাক্ষাতে বলেন, যারা সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেননি তাদের অনুপস্থিতির বিষয়ে তাদেরকেই জিজ্ঞাসা করা হোক।
এর আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একাধিক সূত্র জানিয়েছিল, কমিশনাররা তাদের প্রস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছেন নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা ইতোমধ্যে অফিসিয়াল কাজে ব্যবহৃত ট্যাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। অন্য কমিশনাররা তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র অফিস থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছিল।
এছাড়াও, সিইসি আউয়াল তার পদত্যাগের সিদ্ধান্তের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মিন্টু রোডে তার সরকারি বাসভবন থেকে সরে যেতে শুরু করেছিলেন।
নির্বাচন কমিশনাররা প্রাথমিকভাবে আরও কয়েকদিন দায়িত্ব পালনের ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। তবে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আয়োজিত একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে সিইসি আউয়াল পদত্যাগের বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন, যা অন্যান্য কমিশনারদের তার সিদ্ধান্তের সাথে একমত হতে প্রভাবিত করেছিল।
রাজনৈতিক দল নাগরিক ঐক্য ও গণ অধিকার পরিষদের নিবন্ধন নিয়ে সাম্প্রতিক গোলযোগের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, এসব রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের আক্রমণাত্মক আচরণে সিইসি নিরাপত্তাহীনতা বোধ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিইসিসহ অন্যান্য কমিশনাররা মঙ্গলবার ইসি কার্যালয় ছেড়ে চলে যান।
এর আগে, গত মাসে টিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান পদত্যাগের দাবি নিয়ে বিভ্রান্তি প্রকাশ করে বলেছিলেন, “আমি বুঝতে পারছি না কেন আমাদের পদত্যাগ করতে হবে। আমরা কি কোনো অপরাধ করেছি? আমরা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করেছি। তারপরও যদি কেউ আমাদের পদত্যাগ দাবি করে, আমরা অবশ্যই পদত্যাগ করব।”
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশন ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করে। কমিশনে ছিলেন: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশিদা সুলতানা এবং অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান।
এমটি/ এএটি