জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে মারধর ও হেনস্তার জেরে রাজধানী পরিবহনের ২৪ টি বাস আটক করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বাস আটক করতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। আটক বাসগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে রাখা হয়। এক পর্যায়ে বিকেল চারটার দিকে বাস কর্তৃপক্ষ আলোচনার জন্য আসে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মুচলেকা নিয়ে বাসগুলো ছেড়ে দেয়।

মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম সায়েদ মুয়াজ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৫২ ব্যাচের ছাত্র। এছাড়া এ ঘটনায় হেনস্তার শিকার হয়েছেন আরও তিন ছাত্রী। অভিযুক্ত বাসের সহযোগী (হেল্পার) মো. হান্নান এবং বাসের যাত্রীর নাম মশিউর রহমান তুফান।

ভুক্তভোগী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে মিরপুর-২ এলাকা থেকে বাসে করে ক্যাম্পাসে আসছিলেন ওই চার শিক্ষার্থী। বাসের হেল্পার ভাড়া চাইলে তারা স্টুডেন্ট হিসেবে ২০ টাকা দেন। তবে হেল্পার ২৫ টাকা ভাড়া দাবি করে। এসময় ওই শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া ২০ টাকাই বলে জানালে বাসের হেল্পার তাদের সাথে অসদারণ করতে শুরু করে এবং বাবা-মায়ের নাম তুলে গালিগালাজ করে। ওই শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিলে তারা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েও গালিগালাজ করে। এতে মুয়াজ ক্ষিপ্ত হয়ে ওই হেল্পারের দিকে তেড়ে গেলে হেল্পার হান্নান বাসের সিটের নিচ থেকে একটি লাঠি বের করে তাকে মারধর শুরু করে। পরে বাসের মধ্যে থাকা তুফান নামের এক যাত্রী হেল্পারের সঙ্গে মিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং ভুক্তভোগী মুয়াজকে মারধর করেন। এসময় মুয়াজের সাথে থাকা তিন ছাত্রী প্রতিবাদ জানাতে গেলে তাদেরকেও হেনস্তা করেন তুফান এবং হুমকি দেন।

এদিকে, এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানতে পেরে রাজধানী পরিবহনের বাসগুলো আটকাতে শুরু করেন এবং অভিযুক্ত বাসের হেল্পার মো. হান্নানসহ ওই বাসটিকেও ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। পরে বাস কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে মুচলেকা নিয়ে বাসগুলো বিকেলে ছেড়ে দেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সায়েদ মুয়াজ বলেন, আমরা নিয়মিত যাতায়াত করি। স্টুডেন্ট ভাড়া ২০ টাকাই দিই। আজ ২০ টাকা দিলে বাসের হেল্পার অসদাচরণ করেন এবং বাবা-মা ও ক্যাম্পাস নিয়ে গালিগালাজ করেন। পরে আমি গালির কারণ জানতে এগিয়ে গেলে লাঠি বের করে মারধর করে। হেল্পারের সাথে তুফান নামে এক লোক জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থী শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে সেও মারধর করে। আমার সাথে যারা ছিলো, ঠেকাতে গেলে তাদেরও মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরীন জলি বলেন, ‘বাস কর্তৃপক্ষ এসেছিলেন। তাদের কাছে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দাবি জানিয়েছে। যে বাসের হেল্পার অপরাধ করেছে, সে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আর বাস কর্তৃপক্ষ ওই হেল্পারকে শাস্তি দেবে বলে জানিয়েছে। তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। আর যে যাত্রী শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে তার বিরুদ্ধে থানায় একটা অভিযোগ দেওয়া হবে। ওই ব্যক্তি যদি আত্মসমর্পণ করে তাহলে সেভাবে সুরাহা করবে শিক্ষার্থীরা। আর না করলে সেটা মামলা করা হবে।

এমটি/ এএটি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email