অনলাইন ডেস্ক: বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলার ঘটনায় বিভিন্ন জনের সমালোচনার জবাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

তিনি বলেন, কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে শেখের ছবি সরানো হয়েছে। এই ছবি সরানো নিয়ে যাদের আক্ষেপ, তিনি এই গণ-অভ্যুত্থান ও গণমানুষের চেতনারই নিন্দা জানালেন।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে মাহফুজ আলম সমালোচনাকারীদের এসব জবাব দেন।

জুলাই’র চেতনা উজ্জীবিত থাকতে শেখ মুজিবকে আর কোথাও দেখা যাবে না
অন্তর্বর্তী সরকারই নতুন সংবিধান কার্যকর করবে : মাহফুজ আলম
মাহফুজ আলম বলেন, কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণেই শেখের ছবি সরানো হয়েছে। বাবার নামে ও তার একাত্তর-পরবর্তী চেতনার কথা বলে মেয়ে যে শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তা পুরোপুরি ফ্যাসিবাদ। কেউ যদি সরকারি অফিস থেকে শেখদের ছবি সরানোর কারণে আক্ষেপ প্রকাশ করেন, তবে তিনি এই গণ-অভ্যুত্থান ও গণমানুষের চেতনারই নিন্দা জানালেন।

তিনি বলেন, তার (শেখ হাসিনা) বাবাকে দেবতুল্য করা হয়েছিল। তবে জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের মানুষ একসঙ্গে তাদের দুজনের ছবি, ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নামিয়ে ফেলেছেন। বাংলাদেশের শাসক পরিবারগুলোকে দেবতুল্য করা ও ক্ষমতাসীন পরিবারগুলোর সবকিছু নিজেদের বলে মনে করে। আমাদেরকে এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

নতুন এই উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, ইতিহাসকে মুছে ফেলা যায় না। আমরা এখানে এসেছি, ঐতিহাসিক অসংগতি ও অপব্যাখ্যাগুলো দূর করতে। মনে রাখতে হবে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের গণমানুষের। আবার, কোনো মুক্তিযোদ্ধাও যদি একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করে থাকেন, তার বিচার ও সাজা হওয়া উচিত। স্বাধীনতাযুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন বলেই তাদের এক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া উচিত নয়।

তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিব ও তার কন্যা তাদের ফ্যাসিবাদী শাসনের জন্য জনগণের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েন। তাদের একমাত্র পার্থক্য হলো, শেখ মুজিব একসময় পূর্ব বাংলার গণমানুষের জনপ্রিয় নেতা ছিলেন, কিন্তু সেই জনপ্রিয়তা হাসিনার ছিল না। জনগণ পাকিস্তানি নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তার (শেখ মুজিব) নেতৃত্ব অনুসরণ করেছিলেন, কিন্তু একাত্তরের পর তিনি নিজেই একজন নির্যাতনকারী হয়ে ওঠেন।

মুজিববাদের প্রতি তার সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতায় একাত্তরের পর পঙ্গু ও বিভক্ত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। নিজের ফ্যাসিবাদী ভূমিকার কারণে ১৯৭৫-এ তার মৃত্যুতে মানুষের শোক-অনুতাপ ছিল না।

এমটি/ এএটি

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email